মুক্ত মেইলিং লিস্ট

Google Groups
Subscribe to মুক্ত
Email:
Visit this group

আমাদের বন্ধুরা

 


 

Login Form






Lost Password?
No account yet? Register

সাম্প্রতিক মন্তব্য

বাংলা কম্পিউটিং – আজকে একটি অহংকার
মোদের গরব মোদের আশা আমরি म..
উবুন্টুলিনাক্স বিতরণ করছে BDOSN
There are a lots of software and developer who are working for devel...
কাজের যত মুক্ত সফটওয়্যার
জেন কাট কিভাবে ইন্সটল করব?...
OpenSuse 10.1 লিনাক্সে ব্যবহার করুন একুশে ইউনিজয় লেআ�...
I need help for Ubuntu 8.10. I tried what Omi Bhai says. But it does...
ফায়ারফক্সকে আরও ব্যাবহার উপযোগি করা
@ নাসির Bhai, :D I a really impressed to read this topic...
GCC (GNU Compiler Collection)
Helpful topic for the novice.
কাজের যত মুক্ত সফটওয়্যার
Thanks মুনির হাসান k for his informative article...

ইন্টারনেটে আমার ভাষা
Written by মুনির হাসান   
শুক্রবার, 20 ফেব্রুয়ারী 2009
কোন ভাষা টিকে থাকবে−গুটেনবার্গের ছাপাখানা আবিষ্কারের আগে এ প্রশ্নের উত্তরটা ছিল সহজ। বলা হতো, সেসব ভাষাই টিকে থাকবে, যেগুলোর লিখিত রূপ আছে। যে যে ভাষা কেবল ‘কথাবার্তায়’ চলে, তা বিবর্তিত হয়ে একসময় হারিয়ে যাবে। ছাপাখানা আবিষ্কারের পর, ব্যাপারটা অনেকখানি পাল্টে গেল। তখন বোঝা গেল, ভাষাকে বাঁচিয়ে রাখতে হলে দরকার তার ‘মুদ্রণরূপ’। পরের ইতিহাস অনেক দ্রুত এগিয়েছে। যে ভাষাগুলো তাদের অক্ষরের ছাপ পায়নি, সিসাতে তারা হারিয়ে যেতে শুরু করল। বলা যায়, ভাষার ওপর প্রযুক্তির ছড়ি ঘোরানো সেই থেকে। এরপর এল টাইপরাইটার, ফটোটাইপ সেটিং−ক্রমশ উন্নত প্রযুক্তি!

বিশ শতকে কম্পিউটার, কম্পিউটারের নিজের ভাষা কিন্তু সহজ−জলবৎ তরলং, কেবল ‘১’ আর ‘০’। তা সে ভাষা তো মানুষ ‘সেভাবে’ বোঝে না, তাই তৈরি করা হলো নিয়মকানুন, অনুবাদক। আমাদের ভাষাকে কম্পিউটারের ভাষায় প্রকাশের জন্য একটা মোর্সকোডের মতো ম্যাপ বানানো হলো [মোর্সকোড হলো ড্যাশ আর ডটের মাধ্যমে ইংরেজি বর্ণমালা বোঝানোর সংকেতলিপি। টেলিগ্রাফে ব্যবহূত হয়]। সেটির একটি গালভরা নামও হলো−আসকি (ASCII)। এগুলো কিন্তু মুশকিল নয়, বরং প্রযুক্তির ধারাবাহিক ক্রমবিকাশ। মুশকিলটা হয়েছে অন্য। শিল্প ও জ্ঞান-বিজ্ঞানের বিকাশ এই পৃথিবীর সবখানে একসঙ্গে হয়নি। ফলে কম্পিউটার নামের যন্ত্রটির বিকাশের সঙ্গে যাঁরা জড়িত ছিলেন, তাঁদের সবাই ছিলেন ইংরেজি ভাষাভাষী। ফলে তাঁরা কেবল তাঁদের ভাষার (ইংরেজি) কথা ভেবে যাবতীয় কল-কব্জা, নীতিমালা বানিয়েছেন। কম্পিউটারের ব্যাপারটা এমন যে অচিরে সেটি সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়ল। অন্য ভাষার লোকেরা সেটিকে তাদের মতো করে, তাদের ভাষায় ব্যবহার করতে চাইল। কম্পিউটারবিদেরা পড়লেন বিপদে। কারণ, সব তো বানানো হয়েছে ইংরেজিকে কেন্দ্র করে। ‘যত মুশকিল তত আসান’ কাজে সবাই রাস্তাও বের করে ফেললেন। দুটো রাস্তা−প্রথমটিও ইংরেজির সঙ্গে সহাবস্থান, আশু করণীয় হিসেবে। অর্থাৎ ‘আসকি’র ইংরেজি ছাড়া অংশগুলো নিজেদের ভাষার জন্য ব্যবহার করা, একটি মধ্যবর্তী প্রক্রিয়া ব্যবহার করা ইত্যাদি। ফলে ইংরেজি কম্পিউটারে জাপানি, আরবি এমনকি বাংলা ভাষায় কাজ করা সহজ হয়ে গেল। এ কাজটা করার সময় কয়েকটি জাতি প্রথমেই ম্যাপের ব্যাপারে একমত হয়েছে। যেমন ভারতীয়রা, তারা আসকি থেকে ইসকি (ISCII) বানিয়ে নিয়ে সবাই সেটা মেনে চলেছে। আবার অনেক দেশে আসকির খালি জায়গাগুলো ‘যে যেমন খুশি’ তেমনই ব্যবহার করেছে। যেমন−আমরা। ফলে আমরা কম্পিউটারে বাংলা লিখতে পারলাম বটে, তবে আমার লেখা আর আপনার কম্পিউটারে ‘পড়া’ যায় না! এভাবে কম্পিউটারে ভাষার ‘স্থানীয়’ সমাধানের পাশাপাশি কাজ হলো ‘আন্তর্জাতিক’ সমাধানের। ফলাফল হিসেবে পাওয়া গেল ‘ইউনিকোড’−বলা যায়, ‘আসকিরই শতপুত্র’। আসকিতে ছিল মোটে ২৫৬টি সংকেত। ইউনিকোডে হলো ৬৫ হাজারেরও বেশি! অর্থাৎ কি না পৃথিবীতে যত ভাষা চালু আছে, তার যত প্রতীক আছে, সবই সেখানে রাখা যাবে (ম্যাপিং)।

পৃথিবীর আর দশটি ভাষার মতো আমার মায়ের ভাষাও ঢুকে গেল ইউনিকোডে। অর্থাৎ ইউনিকোডে নির্ধারিত হয়ে গেল বাংলা ভাষার ‘ক’-কে কম্পিউটার কোন সংকেত হিসেবে চিনবে। যে সফটওয়্যারগুলো ইউনিকোড মেনে চলে তাদের বেলায় সব ‘ক’ একই সংকেতে চেনা যাবে। অর্থাৎ আমার আর আপনার কম্পিউটারে বাংলা লেখার পদ্ধতি যদি ইউনিকোড সমর্থিত হয়, তাহলে কারও কোনো বিভ্রান্তি হবে না!
এভাবে আমাদের কম্পিউটারে বাংলা লেখার একটি দীর্ঘদিনের সমস্যার আন্তর্জাতিক সমাধান হয়ে গেল। এখন সেটা মেনে নিলেই হয়। ইতিমধ্যে দেশে ও দেশের বাইরের অগুনতি বাংলাপ্রেমী তাদের চেষ্টা ও অধ্যবসায়ে ইউনিকোডে বাংলা লেখার নানা উপকরণ হাজির করে ফেলেছে। ফলে ধীরে ধীরে হলেও কম্পিউটারে বাংলা ভাষা একটা প্রমিতমানের দিকে এগোতে শুরু করল।

তবে ইউনিকোডে বাংলার এই প্রচলন কেবল যে লেখালেখির সমস্যার সমাধান করেছে, তা কিন্তু নয়। আগে যেহেতু আমরা কেবল কম্পিউটারে লেখালেখি বা হিসাব-নিকাশ করতাম, সেহেতু আমাদের সব ‘বাংলা সমাধান’ ছিল প্রোগ্রাম-নির্ভর। ইউনিকোড এসে আমাদের প্রোগ্রাম-নির্ভরতা থেকে মুক্তি দিয়েছে। অর্থাৎ এখন আপনার কম্পিউটারে যদি ইউনিকোড সমর্থিত বাংলা চালু থাকে, তাহলে আপনি বাংলায় যেমন লেখালেখি বা হিসাব করতে পারবেন তা-ই নয়, আপনি পারবেন আপনার মায়ের ভাষায় ই-মেইল লিখতে, ফেসবুকে স্ট্যাটাস লাইনটি বাংলায় লিখতে, ওয়েবসাইটটি বাংলায় সাজাতে, দিনপঞ্জি বাংলার লিখতে কিংবা বাংলাতেই তাৎক্ষণিক বার্তা আদান-প্রদান করতে!
বলা যায়, একবারেই সব সমস্যার সমাধান।

ইউনিকোডের প্রচলনে ব্যক্তি ও বেসরকারি উদ্যোগের যতটা বিকাশ আমরা গত কয়েক বছরে দেখেছি, সরকারি ক্ষেত্রে ততটা দেখা যায়নি। তবে ২০০৮ সালে ভোটার তালিকা করতে গিয়ে নির্বাচন কমিশন প্রবলভাবে সরকারি কর্মকাণ্ডকে ইউনিকোডে ফিরিয়ে নিয়েছে। দেশের সবচেয়ে বড় তথ্যভাণ্ডারটি (ডেটাবেইস) বাংলা ভাষায়, ইউনিকোডেই হয়েছে। সঙ্গে বাড়তি পাওনা হিসেবে পাওয়া গেছে ‘নিকস’ নামের একগুচ্ছ বাংলা ফন্ট এবং পুরোনো দলিল-দস্তাবেজ ইউনিকোডে রূপান্তরের জন্য রূপান্তরক (কনভার্টার)। শুনেছি এবারের বইমেলায় একটি বইও প্রকাশিত হয়েছে ইউনিকোডে, নিকস ফন্টে। কাজেই শুরুর প্রশ্নের একটা উত্তর আমরা পেয়ে যাচ্ছি। ইউনিকোডে সমর্থিত হলে একটি ভাষা টিকে যাবে কম্পিউটার জগতে এবং এর পাশাপাশি বস্তু জগতেও। তবে খটকা একটা থেকেই যাচ্ছে। কেবল ইউনিকোডে ম্যাপিং, কি-বোর্ড আর সফটওয়্যার থাকলেই সাইবার জগতে বাংলা ভাষা টিকে যাবে? উত্তর খুঁজতে হবে আমাদের দ্বিতীয় দুনিয়ায়, ইন্টারনেটে। উনিশ শতকের সত্তরের দশকের শেষভাগে গবেষণাকাজের সহযোগিতার জন্য যে নেটওয়ার্কের জন্ন, ডব্লিউ ডব্লিউ ডব্লিউ বা ওয়াল্র্ড ওয়াইড ওয়েবের জোয়ারে সেটি এখন ঢুকে পড়েছে আমাদের ঘরেও। ইন্টারনেটের এক বিশাল জাল ক্রমেই মানব জাতিকে এক সুতায় গেঁথে ফেলছে সাইবার জগতের সূত্রে। সেই ইন্টারনেটেই তাহলে টিকে থাকতে হবে ভাষাকে! কেমন করে?
ইন্টারনেটে কেন মানুষ ঢোকে? সহজ জবাব তথ্য খুঁজতে, জানতে। এখন পর্যন্ত ইন্টারনেটে যা কিছু পাওয়া যায়, তার বেশির ভাগ ঠিক করে বললে ৮০-৯০ শতাংশ হলো ইংরেজি ভাষায়। ফলে ইংরেজি না জানলে সেখান থেকে কিছু বের করে আনা মুশকিল। আমাদের মতো দেশগুলোর তাতে আবার সমস্যা (আসকির মতো)! এখন আমাদের দুটো পথ। নিজের মায়ের মুখে ইংরেজি ভাষা বসিয়ে দেওয়া, প্রথমটা। অনেকেই আছে যারা এই মতবাদে বিশ্বাসী। গ্লোবাল ভিলেজের দোহাই দিয়ে তারা আমাদের ভাষা, কৃষ্টি ও ঐতিহ্যকে বিসর্জন দিতে চায়।

আমরা চাই না। ১৯৫২ সালে যে কারণে মায়ের ভাষাকে রাষ্ট্রভাষা করতে চেয়েছি, ঠিক সে কারণেই আমরা ইন্টারনেটে মায়ের ভাষা চায়। বায়ান্নর সঙ্গে পার্থক্য হলো, তখন আমাদের ‘চাওয়ার’ দিন ছিল, এখন আমাদের ‘করার’ দিন। ইন্টারনেটে বাংলা ভাষাকে সমৃদ্ধ করার সব উপকরণই আমাদের আছে। দেশে এমনকি গড়ে উঠেছে স্বেচ্ছাসেবকদের এক বড় বাহিনীও। অনেকেই হয়তো জানে, ইন্টারনেটে বাংলা ভাষার সবচেয়ে বড় তথ্যভাণ্ডার বাংলা উইকিপিডিয়া। গড়ে তুলেছে একদল স্বেচ্ছাসেবী। রয়েছে বাংলা ভাষায় দিনপঞ্জি লেখার অনেক সাইট। বেশ কিছু ওয়েবসাইট এখন সম্পূর্ণ বাংলায়! এসবই আমাদের ভাষায় পতাকা উড়িয়েছে ইন্টারনেটে। তবে সেটিকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য দরকার সরকারি-বেসরকারি, স্বেচ্ছাসেবী, পারিশ্রমিকভিত্তিক−সব ধরনের উদ্যোগ। বাংলা ভাষার সব সেরা সম্পদ, যা ইতিমধ্যে পাবলিক ডোমেইনে চলে এসেছে, সেগুলোকে ইন্টারনেটে উন্নুক্ত করা যায়। রবীন্দ্রনাথ, শরৎচন্দ্র, মীর মশাররফ হোসেন, বেগম রোকেয়াসহ সব মনীষীর সৃষ্টিকর্ম ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেওয়া হোক। সরকারের কাছে গচ্ছিত মহান মুক্তিযুদ্ধের সব ঐতিহাসিক দলিল-দস্তাবেজ, ছবি, চলচ্চিত্রকে জনগণের সম্পদ (পাবলিক ডোমেইন) হিসেবে ঘোষণা করে সেগুলো ইন্টারনেটে প্রকাশ করা হোক। সরকারি পাঠ্যপুস্তকগুলোও ছড়িয়ে দেওয়া হোক সাইবার জগতে।

সব সরকারি ওয়েবসাইটে বাংলাকে বাধ্যতামূলক করে, বাংলা ভাষায় যেন ক্রেডিটকার্ডের লেনদেন করা যায়, এর আয়োজনও করা হোক। ইতিহাস থেকে শিক্ষা নিয়ে আমরা এও জানি, ইন্টারনেটে আমার মায়ের ভাষাকে সগৌরবে প্রতিষ্ঠা করার লড়াইটা করতে হবে, বদলে দেওয়ার প্রত্যাশী তরুণ প্রজন্নকে বাংলা ভাষায় ই-মেইল লিখে (রোমান হরফে নয়) তাৎক্ষণিক বার্তা আদান-প্রদান করে। ব্লগসাইটসহ নানা ফোরামে সক্রিয় হয়ে তাদের বদলে ফেলতে হবে নিজেদের। তাতেই বাড়বে বদলে দেওয়ার শক্তি। ইতিহাসে পরিবর্তনের জন্য রুখে দাঁড়াতে হয়েছে তরুণদেরই। কখনো কলম হাতে, কখনো বন্দুক হাতে। এখন সেটা করতে হবে ইউনিকোড সমর্থিত কিবোর্ডে ঝুঁকে, উইকিপিডিয়া কিংবা ফেসবুকে, মনের আনন্দে কিন্তু দিনবদলের প্রত্যাশায়!
মন্তব্যগুলো (0)
মন্তব্য লিখুন
নাম:
ইমেইল:
শিরোনাম:
মন্তব্য:
Powered by Azrul's Jom Comment
 
< Prev   Next >
কপিরাইট নোটিশ: মুক্ত ম্যাগাজিনের লেখাসমূহ ম্যাগাজিন , পত্রিকা বা অন্যান্য মিডিয়ায় প্রকাশ করা যাবে , তবে এক্ষেত্রে উক্ত লেখাটির মূল লেখকের নাম এবং মুক্ত এর ওয়েব এ্যাড্রেস উল্লেখ করতে হবে
 
This site is powered by: Joomla & Site is hosted by: phpXperts